সুশান্ত কুমার দাস
যুগে যুগে তুমি এসেছ আমাদের মাঝে
ভগবানের বাণী নিয়ে
জীবন কাটিয়েছ অতি সুন্দর সরলভাবে
চলে গেছে আমাদের ছেড়ে ভগবানের
বাণী দিয়ে।
আমরা সাধারন লোক তাই তো
তোমার জন্মদিন নানাভাবে ঘটা করে
পালন করি,
মৃত্যু দিবসেও নানা জায়গায় সভা করে
ফুল দিয়ে ধূপকাঠি জ্বালিয়ে তোমার
ফটোতে রাখে পুষ্পমন্জরী।
সত্যি কথা বলতে কি আমরা কিন্তু
কোন কালেই তোমার উপদেশ শুনি নাই
যে কোন দেশের সব যুগের ইতিহাসে এ
বিষয়টি অতি পরিস্কার দেখতে পাই।
তুমি তো একযুগে এসে বাণী
দিয়েছ নিজেকে যেমন ভালোবাসো তেমনটি বেসো
তোমার প্রতিবেশি আমরা সাধারন লোক — আমরা অস্ত্র
ধারণ করে বহু দেশ দখল করেছি— আর
বাধা হয়ে আমাদের কাছ থেকে
ধর্ম শিখেছে অনেক বিদেশী।
এসবের জন্য কিছু লোকের প্রাণ হারানো
ছিল স্বাভাবিক, স্বাভাবিক ছিল সব
রকমের শঠতা ও নিষ্ঠুরতা।
দূর দেশ থেকে কালো চামড়ার শক্ত দেহ লোককে ক্রীতদাস করে
কাজে খাটানোতে ছিল না কোন ধর্মহীনতা।
তার পরেও তো হে ভগবান!তোমার দূত এসে
বলে গেল শুধু মানুষের মাঝে শান্তি স্থাপন করা।
আমরা সাধারন লোক — শান্তির জন্যই
চিরকাল অস্ত্রধারণ করেছি — আর এতে
লক্ষ লক্ষ লোকের মৃত্যু তো উচিত খুবই
স্বাভাবিক ধরা।
তারপর আবার হাজার বছর পর তুমি মহাপ্রভু হয়ে
এসে বলে গেলে জাতপাত নাই — শুধু নাম
করে যেতে।
সমাজের নিম্নতম শ্রেণীর হরিদাসও শুধু নাম
করে করে সব বাধা সরালো তোমার আলিঙ্গন
পেতে।
আমরা সাধারন লোক — এ সব আমরা বুঝি না —
মানি না তাই তো কতজনকে অত্যাচার
করে পাঠিয়েছি ধর্মান্তরে।
কিছুদিন আগেও তো একজন কবি — মহাপুরুষ
করলেন আবেদন — উপরের সবজন
যেন “শুচি করি মন”– সবার
হাতে হাত ধরে এক সাথে যেন কাজ করে।
আমরা সাধারন লোক — আমরা তো
এসব মনে রাখি শুধু তেমার মৃত্যু ও জন্ম দিবসে।
যখন ফুলের মালা দিয়ে, ধূপকাঠি জ্বালিয়ে
তোমাকে স্মরণ করি কিছুটা কৃত্রিম বিষাদ — হরষে।