বিজয়া ঘোষ
আজও আছে লেক,আছে তার সিঁড়ি, সিমেন্ট বাঁধানো সাদা
সেখানে বসেছে তরুণ তরুণী প্রেমের বাঁধনে বাঁধা
আছে DSF, আছে SFI, ইউনিয়ন বীর
এখানে বাঁধা যে চিরতারুণ্য সময় এখানে স্থির।
ইউনিভার্সিটি তোমার বুকের বিস্তৃত প্রান্তর,
তাতে কি কখনও কোনো ছাপ পড়ে ব্যথা পায় অন্তর?
ইউনিভার্সিটি, আমাদের কথা তোমার কি আছে মনে?
গ্ল্যামারের ছটা ছিল না যাদের, ছিল যারা এক কোণে।
শিলঙ-স্বাগতা, ক্ষ্যাপাটে বিজয়া, মালদার কোহিনূর
খবর রাখো কি কে কোথায় আছে, চলে গেছে কতদূর ?
Ragging এর ভয়ে লুকিয়েছে যারা বাথরুমে সারারাত
কত্থক বোলে ব্রতচারী নেচে আসর করেছে মাত।
মফস্বলের সাদাসিধে রানু, শিশিরের ছোঁয়া গায়ে,
স্মার্ট হবে বলে ব্ল্যাক কফি খেত, চিনি বাদ দিত চায়ে,
ইংলিশ মুভি কথা বোঝা ভার, ভান করে জল-ভাত,
সিলভেস্টার স্ট্যালোনের প্রেমে খাবি খায় দিনরাত।
গড়িয়াহাটার ফুটপাথের স্টলে শাড়ি পছন্দ করা
বেছে দিতে সাথে পুরো টিম যেত,পালা করে হতো পরা
দোলের সকালে ঢোল কাঁখে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে গান
ভেটের পয়সা একত্র করে ঝুপড়িতে জলপান।
সাপ্লি পাবার ডিপ্রেশনে সিক্ ,তাই সিনেমায় যেত,
মেসের খাবারে নুন কম বলে মিলনের ঢপ খেত,
জুনের গরমে নন-এসি হলে বিগ-বির হিট ছবি
ঘামে আর তেলে মাখামাখি, তবু সেরে যেত সব রোগী।
সরস্বতী পুজো সারারাত জেগে রঙ্গিন আলপনা আঁকা
ভিসির বাগানে টব চুরি করে প্রতিমার পাশে রাখা
ভাং-এর নেশায় মাতাল কান্না বিসর্জনের ক্ষণে
কিছু কি তাদের রয়ে গেছে সেথা কিছু কি পড়েছে মনে?
মনে পড়ে যায় ঘুটেদার সাথে সুতপা দিদির প্রেম
ম্যেকানিক্যালের সেই স্যার যার সব মেয়ে হলো গেম,
সন্ধ্যেবেলায় যেন আজও শুনি যাত্রা পালার স্বর
মহিষাসুরের নাম ভূমিকায় সিক্যুরিটি অফিসার।
রেললাইনের পাশে খোলা মাঠে সংস্কৃতি উৎসব
মাঝরাত তক্ সেটা দেখা আর ঘরে ফিরে এসে সব
আলোচনা করি আগামী বছর আমরাও যাব স্টেজে
তারপরে যবে রেজাল্ট বেরোয় সব প্ল্যান যায় ভেসে।
মেটাল্যার্জির বিল্ডিং ঘেষে চলে যাওয়া বনবিথী
তার কিনারেতে পলাশের গাছ ফুল কুড়োবার স্মৃতি
পঁচিশ বছর পেরিয়ে গিয়েছে তবু আজও অমলিন
ভার্সিটি তুমি আমার স্মৃতিতে চিরবাসন্তী দিন।
খুব সুন্দর স্মৃতিচারণ। মাধব চট্টোপাধ্যায়