শান্তনু দে
গভীর অরণ্য মাঝে, পাথুরে গুহার খাঁজে
বাস করত সুখে এক শার্দুল শাবক ।
ছিল বেশ সেইখানে, অরণ্যের মাঝখানে
জীবজন্তু পরে তার ছিল পাওনা হক।
বন্য জন্তু মেরে মেরে, পেটে গেলো চড়া পড়ে
একদা কুবুদ্ধি যে চাপলো তার ঘাড়ে।
অন্যান্য জন্তু প্রতি, হচ্ছে অবিচার অতি
আসক্তি হচ্ছে মোর নরমাংসাহারে।
এতো বলি শার্দুল, গেলো করি মহা ভুল
বনের ধারেতে এক ছোট জনপদে ,
গরু বাছুর কুকুর মারে, বেশ কিছুদিন ধরে
ধরা পড়ে গেলো শেষে পাতা এক ফাঁদে।
গ্রামের মানুষ তাকে, খাঁচার ভেতর পুরে রাখে
বন দপ্তরে শেষে তারা খবর দিলো
সরকারি লোকেরা এসে, আদর করে ভালোবেসে
আলিপুর চিড়িয়াখানায় ধরে নিয়ে গেলো।
এখন সেই শার্দুল, ছোটবেলা ক’রে ভুল
থাকে তোফা আলিপুরে চিড়িয়াখানায়।
বিপুল জনতার ভীড়ে, দুবেলা সে ছোটো নীড়ে
পায়চারী করে খেয়ে দিন কেটে যায়।
কখনো সখনো মনে পড়ে যায় সেই বনে
কেমন সুখের ছিল স্বাধীন জীবন,
তারপরে মনে হলো, এখনই আছি যে ভালো
পেট পুজো,খ্যাতি আর সুখী গৃহ কোণ।
যা পেয়েছি তাই বেশ,চাহিদার নেই শেষ
বেঁচে আছি শান্তিতে আর কিবা চাই,
একবার ভুল করে, বন্দী দশায় পড়ে
আর কেন শেষমেশ সবটা হারাই ।
এবাবেই কেটে যাবে, বাকিটা জীবন ভবে
কেন বৃথা অকারণে শোক করে মরি।
বলেছেন জ্ঞানী জনে, শোক করোনাকো মনে
বিধির লিখন কিসে খণ্ডন করি।
Illustration by Debojyoty Mahapatra